যুদ্ধাপরাধী যখন মন্ত্রী! একটি বিস্ময়

খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার মন্ত্রী নিজামী / ছবি- প্রথম আলো

মুক্তিযুদ্ধকালে আলবদর বাহিনী প্রধান, বুদ্ধিজীবী হত্যার নীলনকশা বাস্তবায়নকারী, শীর্ষ যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের উত্তরসূরি হিসাবে ২০০০ সালে জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বে আসা মতিউর রহমান নিজামীর জন্ম ১৯৪৩ সালের ৩১ মার্চ, পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মনমথপুর গ্রামে।

স্থানীয় বোয়ালমারি মাদ্রাসায় শিক্ষাজীবন শুরু করা নিজামী কামিল পাস করেন ১৯৬৩ সালে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসা থেকে। এরপর প্রাইভেট শিক্ষার্থী হিসাবে ১৯৬৭ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রি নেন।

মাদ্রাসার ছাত্র থাকা অবস্থায় নিজামী ১৯৬১ সালে জামায়াতে ইসলামীর তখনকার ছাত্র সংগঠন ইসলামী ছাত্র সংঘের সঙ্গে যুক্ত হন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ হলেও সেই ছাত্রসংঘই ইসলামী ছাত্রশিবির নামে ফিরে আসে।

১৯৬৬ থেকে তিন বছর পূর্ব পাকিস্তান ইসলামী ছাত্র সংঘের সভাপতির দায়িত্ব পালনের পর একাত্তরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিখিল পাকিস্তান ইসলামী ছাত্রসংঘের সভাপতি ছিলেন নিজামী।

১৯৭১ সালের মার্চে মুক্তিযুদ্ধ শুরুর পর এপ্রিলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করতে মূলত ছাত্রসংঘের কর্মীদের নিয়ে গড়ে তোলা হয় আল বদর বাহিনী। আর ছাত্রসংঘের নেতা হিসাবে আল বদরের নেতৃত্ব নেন নিজামী।

আল বদর গঠিত হওয়ার পর ১৯৭১ এর ২৩ শে এপ্রিল দৈনিক পাকিস্তানে ছাত্রসংঘের সভাপতি নিজামীর একটি বিবৃতি প্রকাশিত হয়, যাতে বলা হয়, “আল বদর একটি নাম, একটি বিস্ময়। আলবদর একটি প্রতিজ্ঞা। যেখানে তথাকথিত মুক্তিবাহিনী সেখানেই আলবদর। যেখানে দুস্কৃতিকারী সেখানেই আলবদর। ভারতীয় চরদের কাছে আলবদর সাক্ষাৎ আজরাইল।”

ওই বাহিনী সারা দেশের বিভিন্ন স্থানে হত্যা, অপহরণ, লুটপাটের মতো ব্যাপক মানবতাবিরোধী কর্মকাণ্ড চালায় এবং মুক্তিযুদ্ধের শেষ দিকে নিশ্চিত পরাজয় বুঝতে পেরে বাঙালি জাতিকে বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে ধ্বংস করে দিতে পরিকল্পিতভাবে দেশের শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করে।

স্বাধীনতা যুদ্ধে বিজয়ের পর বঙ্গবন্ধুর সরকার জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি নিষিদ্ধ করে।

বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর জিয়াউর রহমানের আমলে দেশে ফেরেন জামায়াতের মুক্তিযুদ্ধকালীন আমির গোলাম আযম। স্বাধীন বাংলায় প্রকাশ্য রাজনীতিতে ফেরে স্বাধীনতার বিরোধিতাকারী মানবতাবিরোধী দলটি।

এরপর ১৯৭৮ থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত জামায়াতের ঢাকা মহানগর শাখার আমির ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ছিলেন মতিউর রহমান নিজামী। পরবর্তীতে ১৯৮৩ সালে পদোন্নতি পেয়ে দলের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হন।

১৯৮৮ সালে হন দলের ২য় শীর্ষ নেতা, সেক্রেটারি জেনারেল। গোলাম আযম আমিরের পদ থেকে অবসরে গেলে ২০০০ সাল থেকে নিজামীর নেতৃত্বেই চলে আসে জামায়াতে ইসলামী।

পাবনা-১ আসন থেকে তিনবার সাংসদ নির্বাচিত হওয়া নিজামীকে ২০০১ সালে পাঁচ বছরের জন্য মন্ত্রিত্ব দেন খালেদা জিয়া। প্রথম দুই বছর কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্বের পর সরকারের পরের তিন বছরের জন্য হন বাংলাদেশের শিল্পমন্ত্রী।

ওই সময়েই ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার জন্য পাচারের পথে চট্টগ্রামে ১০ ট্রাক অস্ত্র ধরা পড়ে, যে মামলার রায়ে চলতি বছর ৩০ জানুয়ারি এই নিজামীর ফাঁসির আদেশ হয়। গেটকো দুর্নীতি মামলারও আসামি সরকারের সাবেক এই মন্ত্রী।


প্রধান সংবাদ বিভাগের আরো খবর...
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন শেখ হাসিনাকে নিয়ে ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
৩০০ আসনে মহাজোটের প্রার্থী যারা ৩০০ আসনে মহাজোটের প্রার্থী যারা
বিদেশি পর্যবেক্ষক আনতে অন অ্যারাইভাল ভিসা বিদেশি পর্যবেক্ষক আনতে অন অ্যারাইভাল ভিসা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যারা পেলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যারা পেলেন
দল মনোনীত ২৩০ জনকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের দল মনোনীত ২৩০ জনকে চিঠি দেওয়া হচ্ছে: ওবায়দুল কাদের
স্কুলগুলোর ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ স্কুলগুলোর ছুটির তালিকা ও শিক্ষাপঞ্জি প্রকাশ
‘প্রধানমন্ত্রী সত্যিই আপনি অসাধারণ’ ‘প্রধানমন্ত্রী সত্যিই আপনি অসাধারণ’
গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গণহত্যা দিবসের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি মিলবে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
আবিদের পাশেই চিরশায়িত হবেন স্ত্রী আফসানা আবিদের পাশেই চিরশায়িত হবেন স্ত্রী আফসানা
বর্ণিল উৎসবে অর্জনের উদযাপন বর্ণিল উৎসবে অর্জনের উদযাপন

যুদ্ধাপরাধী যখন মন্ত্রী! একটি বিস্ময়
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet