আশুরা: তওবা কবুলের দিন

মুফতি মুতীউর রহমান

---

মহররম মাসের দশম দিনটিকে হাদিসে আশুরা দিবস বলা হয়েছে। সহি হাদিসসমূহে এ দিনটির ফজিলত, গুরুত্ব, তাৎপর্য ও করণীয় উল্লেখ রয়েছে। আশুরা দিবসে রোজা রাখা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। নবী করিম (সা.) বলেন, আশুরা দিবসের রোজা সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে আশা করি, এর মাধ্যমে তিনি পূর্ববর্তী এক বছরের গুনাহের কাফ্ফারা করে দেবেন। (তিরমিজি ১/১৫৮) তবে শুধু আশুরা দিবসের একটি মাত্র রোজা রাখা অনুত্তম। নবম ও দশম মহররম অথবা দশম ও একাদশ মহররম মোট দুটি রোজা রাখাই উত্তম। (শামী ৩/৩০২, আলমগীরি ১/২০২)। এ বিষয়টিও হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, রসুল (সা.) যখন আশুরার রোজা রাখলেন এবং সাহাবাদের আশুরার রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন তখন সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রসুল! এ দিনটিকে তো ইহুদি ও খ্রিস্টানরা সম্মান করে। রসুল (সা.) বললেন, আমি আগামী বছরে বেঁচে থাকলে নবম মহররমের রোজাও রাখব (মুসলিম ১/৩৫৯) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, তোমরা নবম ও দশম মহররম (দুই দিন) রোজা রাখবে এবং এক্ষেত্রে ইহুদিদের বিরুদ্ধাচরণ করবে। (তারা শুধু আশুরার রোজা রাখে) তিরমিজি ১/১৫৮) হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত। নবী করিম (সা.) আশুরার রোজা প্রসঙ্গে বলেন, তোমরা আশুরার রোজা রাখবে এবং আশুরার আগে অথবা পরে আরও একদিন (মোট দুটি) রোজা রাখবে। ইহুদিদের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখবে না। (ত্বাহাবি ১/৩৬৬) আশুরার রোজার তাৎপর্যও হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। হজরত ইবনে (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, মদিনায় এসে হজরত মুহাম্মদ (সা.) দেখতে পেলেন ইহুদিরা আশুরা দিবসে রোজা রাখে। তখন তিনি বললেন এটা কী? এদিনে তোমরা কেন রোজা রাখ? তারা উত্তর দিল এটি একটি ভালো দিন। এ দিনে আল্লাহতায়ালা বনী ইসরাঈলকে (ফেরাউনের কবল থেকে) মুক্তি দিয়েছেন। এ জন্য (কৃতজ্ঞতাস্বরূপ) হজরত মূসা (আ.) এ দিনে রোজা রেখেছিলেন। তার অনুসরণ করে আমরা রোজা রাখি। হজরত মুহাম্মদ (সা.) বললেন, আমরাই তো মূসা (আ.)-এর অনুসরণের অধিক যোগ্য। অতঃপর তিনি নিজে আশুরার রোজা রাখলেন। সাহাবাদেরও রোজা রাখার নির্দেশ দিলেন। (বুখারি ১/২৬৮)

আশুরা দিবসে তওবা কবুল হয়। এ জন্য আশুরা দিবসে তওবাও করা উচিত। হজরত আলী (রা.) আশুরা দিবসে তওবা করতে বললেন। একটি হাদিসে রয়েছে, নবী করিম (সা.) বলেন, রমজান মাসের পর যদি তুমি আরও কোনো রোজা রাখতে চাও তবে মহররমের রোজা রাখবে। কারণ এ মাসটি হলো আল্লাহর মাস। এতে এমন একটি দিন আছে যেদিনে অতীতেও আল্লাহতায়ালা এক সম্প্রদায়ের তওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও আরও অনেকের তওবা কবুল করবেন। (তিরমিজি ১/১৫৭) এ দিনটিই হচ্ছে আশুরা দিবস। এ জন্য এ দিবসে তওবা করা উচিত। আশা করা যায়, আল্লাহ তওবা কবুল করবেন।

লেখক- খতিব : মুহাম্মদিয়া দারুল উলুম জামে মসজিদ, রামপুরা, ঢাকা।


ইসলাম বিভাগের আরো খবর...
হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বাসস্থান এবং ব্যবহৃত আসবাবপত্র সমূহ (ভিডিও) হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বাসস্থান এবং ব্যবহৃত আসবাবপত্র সমূহ (ভিডিও)
ফ্রান্সে ইসলামী বইয়ের বিক্রি তুঙ্গে ফ্রান্সে ইসলামী বইয়ের বিক্রি তুঙ্গে
ইসলামে নারীমুক্তির হাতছানি ইসলামে নারীমুক্তির হাতছানি
‘ইসলামের খেদমতে’ জাকির নায়েক পুরস্কৃত ‘ইসলামের খেদমতে’ জাকির নায়েক পুরস্কৃত
হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল হজ নিবন্ধনের সময় বাড়ল
৫০ হাজার টাকা দিয়েই করা যাবে হজের নিবন্ধন ৫০ হাজার টাকা দিয়েই করা যাবে হজের নিবন্ধন
মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় শেষ হলো আখেরি মোনাজাত মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনায় শেষ হলো আখেরি মোনাজাত
আয়োজন চলছে জোর প্রস্তুতি আয়োজন চলছে জোর প্রস্তুতি
আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান আশুরার মহান শিক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে সকলের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান

আশুরা: তওবা কবুলের দিন
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet