সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে না বলুন : প্রধানমন্ত্রী

আজ বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে ৪৫তম স্বাধীনতা দিবসের শিশু-কিশোর সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী সেখ হাসিনাপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিশুদের নিরাপত্তা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে হাতাহাতি, সংঘর্ষ ও অগ্নিসংযোগের রাজনীতি পরিহার এবং সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে ‘না ‘ বলতে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের শিশুরা যাতে মর্যাদার সঙ্গে বাঁচতে পারে, এ জন্য একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে আমাদের মাতৃভূমিকে গড়ে তুলতে প্রত্যেককে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে না বলতে হবে।

তিনি আজ রাজধানীতে এক শিশু-কিশোর সমাবেশে প্রধান অতিথির ভাষণ প্রদানকালে একথা বলেন।

৪৫তম স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস পালন উপলক্ষে ঢাকা জেলা প্রশাসন বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে এই সমাবেশের আয়োজন করে। সমাবেশে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী একেএম মোজাম্মেল হক এবং ঢাকার জেলা প্রশাসক তোফাজ্জল হোসেন মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, যারা সন্ত্রাস ও জঙ্গিপনা করছে এবং আগুন দিয়ে শিশুদের জীবন্ত পুড়িয়ে মারছে, তাদেরকে কোন ছাড় দেয়া হবে না। যারা শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে, জাতির কখনোই তাদেরকে ক্ষমতা করবে না। জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আর কোন শিশুর এভাবে মৃত্যু হোক আমরা তা কখনোই প্রত্যাশা করি না। আর কেউ শিশুদেরকে স্কুলে যেতে বাধা দিতে পারবে না।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা শিক্ষা বছরের প্রথম দিকে শিশুদের হাতে বই তুলে দিয়েছিলাম যাতে তারা লেখা-পাড়ায় মনোনিবেশ করতে পারে এবং তাদের শিক্ষা জীবনের একটি দিনও যাতে নষ্ট না হয়। অথচ আমাদের দুর্ভাগ্য, সেই প্রত্যাশা পূরণে বাধা সৃষ্টি করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত জোটের লোকেরা মানুষকে পুড়িয়ে মারছে। এমনকি কোমলমতির শিশুরাও তাদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না। তারা শিশু-কিশোরদের পরীক্ষা দিতে বাধা সৃষ্টি করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, দেশের জনগণ সমাজে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চায়। একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা করে। বর্তমান সরকার জনগণের এই প্রত্যাশা পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অগ্রগতিতে কেউ বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং আগামীদিনেও এগিয়ে যাবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইনশা আল্লাহ ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ মধ্যম আয়ের দেশ হবে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হবে। যেখানে আজকের শিশুরা খুঁজে পাবে একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ।

প্রধানমন্ত্রী একটি খোলা জীপে করে দিবসটি পালন উপলক্ষে আয়োজিত প্যারেড পরিদর্শন করেন এবং সালাম গ্রহণ করেন। তিনি বর্ণাঢ্য কুচকাওয়াজ এবং শিশুদের শারিরীক কসরত প্রত্যক্ষ করেন।

দিবসটি উপলক্ষে বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামের গ্যালারি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ও বীর শ্রেষ্ঠদের প্রতিকৃতি, প্রধানমন্ত্রীর ছবি এবং বাংলাদেশের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ছবি দিয়ে সুসজ্জিত করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসে শিশুদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতা আমাদেরকে নিজস্ব পরিচয়ে বাচার সুযোগ করে দিয়েছে। আমরা আমাদের নিজস্ব পৃথক ভূখ- পেয়েছি। আমরা আমাদের পৃথক জাতীয় পতাকা, জাতীয় সঙ্গীত ও সংবিধান পেয়েছি।

শেখ হাসিনা বলেন, অনেক রক্তের বিনিময়ে আমরা আমাদের স্বাধীনতা পেয়েছি। আমাদের লক্ষ্য স্বাধীনতাকে অর্থবহ করা এবং একটি সমৃদ্ধশালী দেশ গঠনের মাধ্যমে সর্বক্ষেত্রে জাতির অধিকার ও মর্যাদা রক্ষা করা।

শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধু, মুক্তিযুদ্ধে শহীদদের, সকল মুক্তিযোদ্ধা এবং যুদ্ধের সময় পাকিস্তানি দখলদার বাহিনীর হাতে সম্ভ্রম হারা মা-বোনদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।

তিনি বলেন, আমাদের মহান নেতা এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীনতা পেয়েছে। বঙ্গবন্ধু সমগ্র জাতিকে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত করেছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুদের জন্য বঙ্গবন্ধুর গভীর ভালবাসা ছিল। সে কারণে তাঁর জন্মদিনটি শিশুদের জন্য জাতীয় দিবস হিসেবে উৎসর্গ করা হয়েছে। জাতির পিতা দেশের সংবিধানে প্রথম দিকেই শিশুদের অধিকার সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছিলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু প্রত্যেক শিশুর জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছিলেন। পাশাপাশি মাধ্যমিক পর্যায়ে নারী শিক্ষা অবৈতনিক করে দিয়েছিলেন। তিনি শিশুদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে বহুমুখী পদক্ষেপ নিয়েছিলেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায় দেশের যুদ্ধবিধ্বস্ত অর্থনীতি পুনর্গঠন কাজ শুরু হয়। অথচ জাতির দুর্ভাগ্য, স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি তাঁর পরিবারের সঙ্গে তাঁকে নির্মমভাবে হত্যা করে। এ কারণে দীর্ঘ ২১ বছর দেশের অগ্রগতি বাধাগ্রস্ত হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকার প্রণীত শিশু আইন ও শিশু নীতির আলোকে শিশু উন্নয়ন নীতি প্রণয়ন করে। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শিশুদের উন্নয়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং তাদের জন্য শিক্ষার সুযোগ করে দেয়।

তিনি বলেন, তাঁর সরকার এ বছর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক পর্যায় পর্যন্ত প্রত্যেক শিশুর হাতে টেস্ট বই তুলে দিয়েছে। সরকার ১ জানুয়ারি বিনামূল্যে শিক্ষার্থীদের মাঝে ৩২ কোটি বই বিতরণ করেছে।


প্রধান সংবাদ বিভাগের আরো খবর...
শেখ হাসিনাকে নিয়ে ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন শেখ হাসিনাকে নিয়ে ডিপ্লোম্যাট ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ প্রতিবেদন
শিরমাল রুটি শিরমাল রুটি
ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ ও বুড়িগঙ্গা ঢাকায় রবীন্দ্রনাথ ও বুড়িগঙ্গা
৩০০ আসনে মহাজোটের প্রার্থী যারা ৩০০ আসনে মহাজোটের প্রার্থী যারা
বিদেশি পর্যবেক্ষক আনতে অন অ্যারাইভাল ভিসা বিদেশি পর্যবেক্ষক আনতে অন অ্যারাইভাল ভিসা
আ. লীগের যেসব হেভিওয়েট নেতা মনোনয়ন পাননি আ. লীগের যেসব হেভিওয়েট নেতা মনোনয়ন পাননি
গণফোরামে যোগ দিলেন আ’লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ গণফোরামে যোগ দিলেন আ’লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবু সাইয়িদ
ঘোষণা ছাড়াই মনোনীত প্রার্থীদের চিঠি দিচ্ছে বিএনপি ঘোষণা ছাড়াই মনোনীত প্রার্থীদের চিঠি দিচ্ছে বিএনপি
আ. লীগের মনোনয়ন পেলেন যেসব তারকা আ. লীগের মনোনয়ন পেলেন যেসব তারকা
আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যারা পেলেন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন যারা পেলেন

সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদকে না বলুন : প্রধানমন্ত্রী
(সংবাদটি ভালো লাগলে কিংবা গুরুত্ত্বপূর্ণ মনে হলে অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।)
tweet